ভ্রান্তিবাসরে বাস
কাব্য বোঝ না। বোঝ?
হৃদ্যিক ভালোবাসা না, ভ্রান্তির প্রমোদ খোঁজ।
চাতুর্য বোঝ বেশ ভালো
অসুরেও সুর খোঁজ - পার্থক্য কী শাদা আর কালো!
পূর্ণিমার চাঁদ থাকে তোমার খাড়া-করা বুড়ো আঙ্গুলে,
অমাবস্যার তিথিকেই ধর মায়ার জালে।
সমুদ্রের মায়াবী ডাক অতি তুচ্ছ,
এঁদো ডোবায় ভেজাও তুমি পুচ্ছ।
গোধূলীর মমতা- ও যেন বিমাতা
নিকষ কালো আঁধারে পাও তুমি সমতা।
দাঁড়কাক বড্ড বোকা, নষ্ট করে হৃদয়টাকে
তুমি থাকো রসাস্বদনে, ভাবো- কেন থাকবে পড়ে ফাঁকে!
তবে তাই হউক আজ
মিলেমিশে দৈত্যরা গিলে খাক পোখরাজ।
বুঝে নাও
আগে শোন-
আমার একটা বাড়ি নাই,
কিংবা উদাস আকাশপানে গৎবাঁধা অহংকারে
দাঁড়িয়ে থাকা সুরম্য অট্টালিকা।
দুটো বেড একটি ড্রয়িং
দুই বাথ দুই বারান্দা
কেবিনেটের মুগ্ধময়তার কিচেন
তা-ও নাই।
তবে লোমখচিত প্রশস্ত বুকের
এক সুভাসিত জমিন আছে।
আলোকিত লোমসজমিনে
তুমি হীরকের সন্ধান পেতে পারো।
আমার একটা গাড়ি নাই,
টয়োটা করোলা মার্সিডিজ বিএমডব্লিউ।
তবে আমার অসীমের গতি আছে
ঘন্টায় হাজার কিলো যার বেগ।
চাইলে লংড্রাইভে যেতে পারো
পেতে আশাতীত আস্বাদিত শিহরণ।
আমার বিত্ত নাই বৈভব নাই,
কিংবা কাড়ি কাড়ি শাদাকালো টাকা।
তবে আমার মসি আছে,
কবিতা লিখে যায়
সৃজনে মসৃণতায়।
চাইলে হতে পারো
ভার্জিন শাদা খাতা।
আমার গাড়ি নাই ঘোড়া নাই,
কিংবা রাজ সিংহাসন।
তবে শীতের সকালের
ঝক্ঝকে সোনালী রৌদ্দুরতুল্য
মনাসন আছে।
চাইলে রানী হতে পারো
হতে পারো নিখাদ গর্ববতী।
সিদ্ধান্ত তোমার।
নিবেদন
ইচ্ছেঘুড়ির নাটাই ছাড়ো-
উড়ুক পড়ুক
আবার উড়ুক
আকাশ মম ধরো।
স্বপ্ন দেখো স্বপ্ন বোন-
ভালোমন্দ
কীসের দ্বন্দ্ব
খোয়াব রেখায় থাকি যেনো।
ছবি আঁক রংতুলিতে-
লাল নীল আর সবুজ
দিয়ে তোমার স্ব-বুঝ।
এই তো বুরুজ মোর ঝুলিতে।
সুর তোল আজ তোমার বীণায়।
মধুর নিশি
দু’জন খুশি
আসন নেবো নতুন গানায়।
ভোলো মন্দ তোলো ছন্দ-
সুখের সিন্ধু
পুলক বিন্দু
ঘুচাই চলো মনের বন্দ।
গ্রন্থিকগণে কবির কান্ডজ্ঞান
অগণন কাব্য বুকের গহীনে-
সহস্র-অযুত গ্রন্থ জিন্দিগীর এই মেলায়।
মোড়ক উন্মোচনে-
যান কবি নিগূঢ় যতনে।
মরমে প্রণয় নিয়ে, নয় কোনো হেলায়।
এক পৃষ্ঠা দুই পৃষ্ঠা- পদবিন্যাসে যান,
শাদা পত্রে নোংরা কালি - কলঙ্কই শুধু পান।
ঝিনুক ভেঙ্গে মুক্তো খোঁজা, নিখাদটাই তার চাই যে,
বিষাদের পেয়ালা কবির ঠোঁটে, কিছুই করার নাই যে।
গ্রন্থিকগণ ক’ন-
আমারটাই শ্রেষ্ঠ।
কবিই বোঝেন - শ্রেষ্ঠ কিংবা ভ্রষ্ট।
পুরষকারে তুমি
অতএব, তুমি সোপান লাফিয়ে অবরোহনে এলে,
ডাকুবুকুর লুন্ঠিতমাল ফেরত পাওয়ার
কচি উল্লাস সবুজ করোটির তলে।
তোমার নয়নায় জোড়া প্রশান্ত চাঁদ,
জোছনার ঘ্রাণ ঝাপটা মারে নাকের ছেঁদায়
সাতাশ সাইকেলের গামা ওয়েভ-
অন্তরতম প্রদেশে সুখ পুরে দেয়।
তুমি নিঃশ্বাস হও; বিশ্বাস দাও
আমার পৌরুষের মিশ্রণ হও জিন্দিগীতরে।
ক্ষমাপত্র
প্রজ্ঞপ্তির প্রবর্তন; প্রণয়ীনীর স্বহস্তে
সরণি বাহিত হই তৎমোতাবেক
ধীরে সযতনে সুস্থে।
ক্বচিৎ সৃষ্ট পথে - পরিতোষ লাভের
প্রগাঢ় বাসনাজাল সত্তায় জড়িয়ে।
প্রিতম - তোমার তুষ্টিই উপাস্য।
হাহ!
কী করি হায়!
কোথায় যাই।
জীবনের পাঠক্রমে নষ্ট ভ্রষ্ট পাঠসম্ভার,
অপভ্রষ্ট শিক্ষণ; জানি নয় শ্রেয়স্কর
অতএব, নিষ্ক্রান্ত হতে
দৃপ্ত পদচারণায় সম্মুখ সমরে যুঝি।
চেষ্টার শেষটা দেখি।
ফলাফল-
পরাস্ত ক্লান্ত শ্রান্তমুখী।
প্রতিশ্রুতির খেলাপকরণ
মম নিজের মনে বিচ্যূতি; তাই ক্ষমার্হ করে নাও
স্পর্শনে তোমার জ্যোতি।
ফারুক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক, হামদর্দ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।