রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন সংবাদকর্মী। শনিবার কাকরাইল, ফকিরাপুল, নয়াপল্টন ও বিজয়নগরসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তারা আক্রান্ত হন। তাদের অনেকেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এসময় সাংবাদিকদের গাড়ি, ক্যামেরা, ভাঙচুরসহ মোবাইল, ট্যাব ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আহত সাংবাদিকদের মধ্যে আছেন,ডিজিটাল খবরের এমদাদুল হক এবং মেহেদী, একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক সাজিদ সরকার, নিউ এজের আহমেদ ফয়েজ, বাংলা ট্রিবিউনের প্রধান প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল, ফটো সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন ও নিজস্ব প্রতিবেদক জোবায়ের আহমেদ, দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদক রাফসান জানি, আবু সালেহ মুসা, রবিউল ইসলাম রুবেল ও তৌহিদুল ইসলাম তারেক, ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদক সালেকিন তারিন, ব্রেকিং নিউজের ক্রাইম রিপোর্টার কাজী ইহসান বিন দিদার, দৈনিক ইনকিলাবের ফটোসাংবাদিক এফ এ মাসুম, দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার তানভীর আহাম্মেদ, একুশে টিভির রিপোর্টার তৌহিদুর রহমান ও ক্যামেরা পারসন আরিফুর রহমান, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাংবাদিক আরিফুর রহমান রাব্বি এবং ইত্তেফাকের সাংবাদিক শেখ নাছের ও ফ্রিল্যান্সার মারুফ।
এছাড়া অনেক সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে মেমেরি কার্ড রেখে দিয়েছে।ডিজিটাল খবরের সাংবাদিক এমদাদুল হক জানিয়েছেন তার থেকে ক্যামেরা কেড়ে নিয়েছে ফেরত দেয়নি।
সংঘর্ষে আহত এক সাংবাদিক জানান, আরামবাগ মোড়ে তিনটি কলেজের সামনে লাঞ্ছিত হয়েছেন। চড়, ঘুষি দেওয়ার পর তারা ক্যামেরা নিয়ে গেছে। গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টাও করেছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী সম্পাদক রিয়াদ খন্দকার বলেন, ঢাকা মেডিক্যালের ইমার্জেন্সিতে গিয়ে দেখি আহতের মধ্যে সাংবাদিক ও পুলিশের সংখ্যাই বেশি। ইত্তেফাকের জুনিয়র দুই সহকর্মী কর্তব্যরত অবস্থায় আহত হয়েছেন। তাদের জাতিগত দুশমনের মতো পেটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক পিটিয়ে ক্ষমতা দখল করা যায় না’ -এই সহজ যুক্তিটা মুর্খগুলো কবে বুঝবে!। এই তাণ্ডবের শেষ কোথায় জানি না।
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের সদস্য সচিব ও একাত্তর টেলিভিশনের হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ বলেন, অপরাধীরা বার বার নিজেদের বাঁচাতে সংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করে আসছে। আজও একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখালম।
তিনি বলেন, এ সব ঘটনার ফুটেজ বিশেষ করে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশকেই মামলা করার আহবান জানাচ্ছি। সাংবাদিকরা রাষ্ট্র ও জনগণের পক্ষে সত্য প্রকাশে কাজ করে। তাদের ওপর হামলা রাষ্ট্রের ওপর হামলা বলেই মনে করি।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকরা সব সময় দেশ, জাতি এবং মানুষের কল্যাণে নিবেদিত থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশে আমাদের দুর্ভাগ্য যে, যখনই কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হয় তখনই কিন্তু সাংবাদিকরা নানাভাবে হামলার শিকার হন।
কোনো কোনো রাজনৈতিক দল সাংবাদিকদের টার্গেট করে। যেমন আজকে এমনটা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, সাংবাদিকদের বিভিন্ন ডিভাইস ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপর এমন ঘটনা পুরো জাতির জন্য লজ্জার। ডিইউজের পক্ষ থেকে আমরা এ ধরনের হামলার নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
গোনিউজ২৪/আর এ জে
আপনার মতামত লিখুন :