কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এখন থেকে ব্যাংকগুলো কারেন্সি সোয়াপ বা টাকা-ডলার অদল-বদল করতে পারবে। এ পদ্ধতিতে টাকা বা ডলার জমা রেখে সাত থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের জন্য বিপরীত মুদ্রা নিতে পারবে ব্যাংক। যে মুদ্রা নেওয়া হবে, নির্ধারিত মেয়াদ শেষে সেই মুদ্রা ফেরত দিতে হবে। মুদ্রা অদল-বদলের কারণে নির্ধারিত সময়ের জন্য সুদ পাবে একটি পক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে এখন টাকা ও ডলার উভয় মুদ্রার সংকট তৈরি হয়েছে। সাময়িক সংকট মেটাতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে কোনো ব্যাংকের কাছে হয়তো টাকা আছে, কিন্তু ডলার নেই। আবার কোনো ব্যাংকের ডলার আছে, টাকা নেই। এ জন্য যার কাছে যে মুদ্রা থাকবে, সাময়িকভাবে সে বিপরীত মুদ্রা নিতে পারবে। তুলনামূলক কম সুদ ও সহজ শর্তে অদল-বদল সুযোগের কারণে বাজারে তারল্য সংকট কমতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, স্থানীয় মুদ্রাবাজার গতিশীল করতে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ডলার বা যে কোনো স্বীকৃত বৈদেশিক মুদ্রা জমা রেখে টাকা নেওয়া যাবে। আবার টাকা জমা রেখে ডলার বা অন্য স্বীকৃত মুদ্রা নেওয়া যাবে। সোয়াপের ক্ষেত্রে ওই দিনের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারভিত্তিক দর হিসাব করা হবে। শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সোয়াপে কোনো সুদ আরোপ হবে না। তবে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ক্ষেত্রে টাকার নীতি সুদহার রেপো এবং ডলারের বেঞ্চমার্ক রেট সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটের (এসওএফআর) মধ্যে যে পার্থক্য থাকবে, সে পরিমাণ সুদ পাবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সোয়াপের সাধারণ মেয়াদ হবে সাত থেকে ৯০ দিন। তবে ব্যাংক চাইলে রোলওভার করতে পারবে। আর যে মুদ্রায় অর্থ নেওয়া হবে, নির্ধারিত মেয়াদ শেষে সেই মুদ্রায়ই অর্থ ফেরত দিতে হবে। সোয়াপের দিন যে বিনিময় হার হবে, সেটি ধরেই মেয়াদপূর্তির তারিখে অর্থ ফেরত পাবে ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, সোয়াপের ক্ষেত্রে সুদহারের হিসাব হবে টাকা ও ডলারের নীতি সুদহারের সঙ্গে পার্থক্যের ভিত্তিতে। বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে বলা যায়, বর্তমানে রেপোর সুদহার রয়েছে ৮ শতাংশ। আর ডলারের ৯০ দিন মেয়াদি বেঞ্চমার্ক রেট এসওএফআর ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর মানে ডলারের বেঞ্চমার্ক রেটের চেয়ে নীতি সুদহার বেশি তথা পার্থক্য আছে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এখন যদি কোনো ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রেখে ডলার নেয়, তাহলে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে মূল টাকার সঙ্গে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ সুদ যোগ করে ফেরত দিতে হবে। আর কোনো ব্যাংক যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ডলার রেখে টাকা নেয়, তাহলে ওই ব্যাংক পাবে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
আপনার মতামত লিখুন :