ঢালিউড কুইন, সুন্দরী তমা, ডায়নামিক অভিনেত্রী, নায়ক তৈরির নায়িকা; অনেক বিশেষণেই তাকে ডাকেন ভক্তরা। তিনি পরিচালকদের ভরসার নাম, প্রযোজকদের ব্যবসায়ের লক্ষ্মী। ক্যারিয়ারজুড়ে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য হিট ও সুপারহিট সিনেমা। বলছি শাবনূরের কথা।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ শাবনূর অভিনীত ‘পাগল মানুষ’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। তার কাজ অবশ্য শুরু হয়েছিল বেশ আগেই। এরপর সিনেমা থেকে দূরে তিনি। প্রবাসজীবন বেছে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। একমাত্র পুত্র আইজান ও ভাইবোনদের সঙ্গে নিয়ে নিবাস গড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় শহর সিডনিতে। মাঝেমধ্যে দেশে আসেন, ঘুরে ফিরে আবার চলে যান। যখনই শাবনূর দেশে ফেরেন তখনই তাকে ঘিরে চলে সিনেমার আলোচনা। আসে অনেক সিনেমার ঘোষণাও। তবে শাবনূরকে শেষ কবে সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা গেছে তা জানতে অনেকটা সময় নিয়ে হিসাব করতে হবে।
সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন এই নায়িকা। আর এবারও তাকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা এসেছে। এবার তিনি শারীরিকভাবে আগের চেয়ে অনেক সুস্থ। ওজনও কমেছে কিছুটা। তাই তাকে সিনেমায় পেতে আগ্রহী অনেক প্রযোজক ও পরিচালক। তারা শাবনূরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তার শিডিউল চাইছেন। আছে ওটিটিরও কিছু প্রস্তাব। এত কাজের প্রস্তাব পেয়ে শাবনূরও চমকিত। তিনি বলেন, ‘অনেকেই কাজের কথা বলছেন। তবে আমি গল্প ও চরিত্র পছন্দ হলে কিছু কাজ করব।’
শাবনূরকে নিয়ে এ যাত্রায় সিনেমা করার প্রথম চমকটা দেন ‘প্রহেলিকা’ দিয়ে দর্শকের প্রশংসা পাওয়া পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী। তিনি জানান, শাবনূরকে নিয়ে ‘মাতাল হাওয়া’ নামে সিনেমা বানাতে যাচ্ছেন। সেখানে শাবনূরকে দেখা যাবে মাহফুজ আহমেদের বিপরীতে। খবরটি বেশ আলোচনায় আসে। বিশেষ করে শাবনূর সিনেমায় ফিরছেন এ বিষয়টি বেশ উপভোগ করেছেন ভক্তরা। ‘বাঙলা’, ‘চার সতীনের ঘর’ ও ‘কপাল’ সিনেমার প্রায় দেড় যুগ পর মাহফুজ আহমেদের সঙ্গে জুটি হয়ে শাবনূরের সিনেমায় প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।
এর কিছুদিন পরই ঘোষণা আসে আরও একটি সিনেমার। ‘রঙ্গনা’ নামে সিনেমাটি পরিচালনা করবেন নবীন নির্মাতা আরাফাত হোসাইন। এ ছবির শুটিং দিয়েই নতুন বছরে দীর্ঘদিন পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন শাবনূর, এমনটাই জানানো হয়েছে পরিচালকের পক্ষ থেকে। তবে তাই হোক। শুধু ঘোষণাতেই আটকে না থেকে শাবনূরকে নিয়ে সিনেমা সত্যি হোক। বারবার ঘোষণায় আটকে থাকার যে হতাশা শাবনূরভক্তদের, সেটাও কেটে যাক।
এ ছবি নিয়ে শাবনূর বেশ আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া থাকাকালে সাত মাস আগে রঙ্গনার গল্পটি আমাকে পাঠানো হয়। তখনই কাজটি করতে রাজি হই। সিনেমার গানগুলো খুবই চমৎকার। কবির বকুল ভাইয়ের হাতে জাদু আছে। সিনেমাটির গান শুনেই ইচ্ছে করেছিল লাফ দিয়ে শুটিংয়ে নেমে যাই। এ সিনেমা দিয়েই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব। এখন নিজেকে প্রস্তুত করছি। আশা করি দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করবেন।’
গেল ২৯ ডিসেম্বর ছিল শাবনূরের ছেলে আইজানের জন্মদিন। সেদিন তার ঘরোয়া আয়োজনে আমন্ত্রিত ছিলেন কাছের মানুষেরা। তাদের একজন মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন শাবনূরকে নিয়ে ‘দুই নয়নের আলো’ সিনেমার সিক্যুয়েলটি তৈরি করবেন। দুই নয়নের আলো দিয়েই ক্যারিয়ারে প্রথমবার সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলেন।
তবে শাবনূর কত দিন দেশে থাকবেন তার ওপর নির্ভর করছে তার কাজের পরিমাণ। সেই সঙ্গে শাবনূরের শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টিও অনেকে মাতায় রাখছেন। এ নায়িকা থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত অনেক দিন ধরেই। তবে সুচিকিৎসায় বেশ সেরে উঠেছেন তিনি। তার সুস্থতার খবরেই ঢালিউডের নির্মাতারা আগ্রহী হচ্ছেন তাকে নিয়ে।
তাদের ভাষ্য, ‘নায়িকারা দীর্ঘদিন পর্দায় না থাকলে দর্শকের মনের আড়ালে চলে যান। কিন্তু শাবনূরের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। বরং অনুরাগীরা প্রিয় নায়িকার সিনেমায় ফেরার অপেক্ষায় উন্মুখ হয়ে আছেন। তিনি সিনেমায় নিয়মিত হলে ইন্ডাস্ট্রির জন্য সেটা ইতিবাচক হতে পারে। কারণ এখনও তাকে সিনেমায় দেখতে আগ্রহী দর্শক। সময়ের সঙ্গে মানিয়ে চরিত্র বাছাই করতে পারলে দীর্ঘদিন ঢালিউডকে নেতৃত্ব দেওয়া শাবনূর আবারও সবার প্রিয় ও ভরসার অভিনেত্রী হয়ে উঠবেন।’
আপনার মতামত লিখুন :