সমালোচনার জবাবে যা বললেন বিদ্যানন্দের চেয়ারম্যান

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৩, ১১:২৯ এএম

সমালোচনার জবাবে যা বললেন বিদ্যানন্দের চেয়ারম্যান

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নিয়ে নানা সমালোচনার ঝড় বইছে। ফেসবুকে প্রকাশিত একটি কোলাজ ছবি ঘিরে বিদ্যানন্দের অন্যান্য কাজ এবং প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতা নিয়েও ফেসবুকে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।

সোমবার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাস তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে সমালোচনার জবাব দিয়েছেন।

তিনি বলেন, যাঁরা বিদ্যানন্দকে নিয়ে সমালোচনা করছেন, তাঁরা মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই তা করছেন। তাঁরা ভাবছেন, বিদ্যানন্দ ভুল করলে তা দেশের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে বিদ্যানন্দের কাজকর্মে কেউ অস্বচ্ছতা পেলে বা প্রতিষ্ঠানটি অনৈতিক কাজ করছে, এমন মনে করলে যে কেউ বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন।

এর আগেও বিভিন্নজন উকিল নোটিশ পাঠানো হলে তার জবাবও দেওয়া হয় বলে জানান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাস।

কিশোর কুমার দাস আরও বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে তিনি ভুলের জন্য দায়ী এবং এ অপরাধে পদ ছাড়তে বললে তাতেও তাঁর কোনো আপত্তি নেই। বিদ্যানন্দের ৮ থেকে ১০টি ফেসবুক পেজ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সব পেজে প্রায় ৩০ হাজার লেখা আছে, তার মধ্যে ৩০টি লেখাতে ভুল থাকতেই পারে। তরুণ স্বেচ্ছাসেবকেরা এ লেখাগুলো লিখছেন, বেতনভুক্ত কেউ লিখছেন না।

ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বলেছেন, অনেকে অভিযোগ করেছেন, বিদ্যানন্দ বঙ্গবাজারে কাজ করায় পুরো মনোযোগ বিদ্যানন্দের দিকে চলে গেছে। বিদ্যানন্দের জন্যই নাকি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর যে ধরনের প্রতিবাদ হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি।

বঙ্গবাজার তহবিলে দুই কোটি টাকা জমা হয়েছে বলে জানিয়ে কিশোর কুমার দাস বলেন, অনুষ্ঠান করেই এ টাকা বিতরণ করা হবে। তবে অনুষ্ঠান কোথায় হবে, তা আগে থেকে কেন জানানো হয় না, তা নিয়েও অনেকে সমালোচনা করছেন। আসলে আগে থেকে জানানো হলে অনেককেই চাঁদা দিতে হয়। প্রতিষ্ঠান এটি চায় না বলেই আগে থেকে স্থান জানানো হয় না।

বিদ্যানন্দ পাহাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় জমি কেনার বিষয়ে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যানন্দ বেশির ভাগ জমির মালিক না, লিজ নেওয়া। শর্ত অনুযায়ী লিজ নেওয়া হয়েছে জমিগুলো। এ সময় জমিতে অনাথালয়, এতিমখানা, হাসপাতালের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাহাড়ে অনাথালয়গুলোতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা থাকছে, স্থানীয় লোকজনই সেখানে কাজ করছেন। তবে স্থায়ী উদ্যোগের জন্য কুড়িগ্রামে মেয়েদের এতিমখানার জন্য এক একরের বেশি জায়গা এবং রামুতে এতিমখানার জন্য জমি কিনেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

জাকাত নেওয়া প্রসঙ্গে কিশোর কুমার দাস বলেন, গত বছর বিদ্যানন্দ চেয়েছিল আর জাকাত নেবে না। তখন একজন হুজুর বলেছিলেন, কেউ জাকাত দিতে চাইলে কেন নেবেন না? সে কারণে সিদ্ধান্ত পাল্টানো হয়। এ ছাড়া জাকাত না নিলে আবার প্রশ্ন তুলবেন অনেকে বা অন্য ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু হবে। আর  দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া বিদ্যানন্দের মূল তহবিলের মাত্র ৫ শতাংশ আসে জাকাত থেকে।

মজিদ চাচা বিষয়ে কিশোর কুমার দাস বলেন, একটি রূপক বা প্রতীকী চরিত্র। একবার সত্যিকার একজন উপকারভোগীর নাম প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে ওই ব্যক্তির নাম একজন বিখ্যাত লোকের নামের মিল থাকায় তখন বলা হয়েছিল বিদ্যানন্দ ইচ্ছা করেই ওই বিখ্যাত ব্যক্তিকে অপমান করার জন্য কাজটি করেছে।

উল্লেখ, ৪ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা ব্যবসায়ীদের সহায়তায় নানা উদ্যোগ নেন। স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে পুড়ে যাওয়া কাপড়গুলো ব্যবহার উপযোগী করার পর অভিনেতা–অভিনেত্রীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের জনপ্রিয় ব্যক্তিদের কাছে তা বিক্রি করেন। যে কাপড় বাঁচানো সম্ভব হয়েছে, তা দিয়ে শিশুদের পোশাক, গয়নাসহ নানা পণ্য বানিয়ে তা বিক্রি করে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

এক নারী উদ্যোক্তার বানানো কিছু গয়নার ছবি দেখেই ওই সব গয়না বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। তবে বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজে কোলাজ ছবি প্রকাশের সময় ওই নারী উদ্যোক্তার বানানো কয়েকটি গয়নার ছবিও প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে পেজ থেকে তা সরিয়ে ফেলা হয় এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়।

 

গো নিউজ২৪

Link copied!