স্পেন সরকার কাতালোনিয়ার আট মন্ত্রীকে কারাগারে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের হাউকোর্টে হাজির হলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এর আগে ওই আট মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছিল স্পেন সরকার। এদিকে, আট মন্ত্রীকে কারাগারে পাঠানোর পর বার্সেলোনার রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
স্পেন থেকে স্বাধীন হওয়ার ডাক দিয়ে গণভোট আয়োজনের পর কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক সরকারকে বরখাস্ত করে মাদ্রিদ। এই মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিদ্রোহ ও সরকারি তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টও রয়েছেন।
দেশ ছেড়ে বেলজিয়ামে অবস্থান নেওয়া কাতালোনিয়ার ক্ষমতাচ্যুত আঞ্চলিক সরকারের প্রেসিডেন্ট কার্লোস পুজদেমনের এদিন আদালতে হাজির হননি। তার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন সরকারি কৌঁসুলিরা। একইসঙ্গে, সমন জারির পরও আদালতে হাজির না হওয়া আরও চার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। মোট ১৪ নেতার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছিল।
আদালতের ওই নির্দেশের পর বেলজিয়ামের অজ্ঞাতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট পুজদেমন অবিলম্বে নেতাদের মুক্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘এ পদক্ষেপ গণতন্ত্রের মৌলিক নীতির লঙ্ঘন।’ কাতালান টিভিতে বিবৃতিটি প্রচার করা হয়।
গত ১ অক্টোবর আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের আয়োজন করে কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক সরকার। স্পেন পুলিশের প্রবল বাধার মুখে অনুষ্ঠিত ওই গণভোটে ৪৪ শতাংশ কাতালান ভোট দেন। তাতে স্বাধীনতার পক্ষে ভোট পড়ে ৯০ শতাংশেরও বেশি।
এরপর গত সপ্তাহে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজোয় কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে সেখানে কেন্দ্রের শাসন জারি করেন। আগামী ২১ ডিসেম্বর প্রদেশটিতে নির্বাচনেরও ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে গত শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) কাতালোনিয়ার আইনপ্রণেতারা আঞ্চলিক পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে স্বাধীনতার ঘোষণার পক্ষে রায় দেন। এর পরপরই পুজদেমনের নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক সরকারকে বরখাস্ত করে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার। পুজদেমনসহ স্বাধীনতাপন্থী নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও আনা হয়। এরপর বেলজিয়াম চলে যান পুজদেমন। তার সঙ্গে পাঁচ মন্ত্রীও রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ৯ নেতা আদালতে হাজির হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একমাত্র সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী স্যান্টি ভিয়াকে জামিন দেন বিচারক। গত শুক্রবারের ভোটাভুটির আগে তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। বাকি আট নেতাকে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিচারক বলেন, তারা মুক্ত থাকলে হয় পালিয়ে যাবেন, নয়তো মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ বিনষ্ট করবেন। খবর: বিবিসি ও গার্ডিয়ান।
গোনিউজ২৪/কেআর
আপনার মতামত লিখুন :