ঢাকা: খালেদা জিয়া ক্ষমতা থাকাকালে দুর্নীতির টাকার মায়ের ভাগ ফালু আর পুত্রের ভাগ মামুনকে দিতে হতো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়া ক্ষমতা আসার পরে বাংলাভাই সৃষ্টি হয়েছে, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। আর হাওয়া ভবন ও গাজীপুরের হাব ভবনে টাকা না দিয়ে কেউ ব্যবসা করতে পারতো না। প্রধানমন্ত্রীর অফিসেও ‘উন্নয়ন মানি’ দিতো হতো। টাকা আবার এক তরফা দিলে হতো না। মায়ের ও পুত্রের দুই ভাগ দিতে হতো। মায়ের ভাগ যাবে ফালুর কাছে আর পুত্রের ভাগ যাবে মামুনের কাছে- এ ছিল তখনকার ব্যবস্থা। এভাবে শুধু দুর্নীতি করে গেছে, দেশের কোনো উন্নয়ন করে যায়নি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পর এদেশের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। ভাগ্যের উন্নতি হয়েছে। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ৯৭ সালে আমরা নারী নীতিমালা তৈরি করি। নারী উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করি। বাংলাদেশে প্রথম নারী সচিব, নারী জজ, নারী এসপিসহ বিভিন্ন পদে আমরাই নিয়োগ দিয়েছি। এভাবেই আমরা আমাদের মেয়েদের বিভিন্ন পদে স্থান করে দিয়েছি। তারা তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছে।”
ভারতের কাছ থেকে কেউ কিছু আদায় করতে না পারলেও আওয়ামী লীগ সরকার তা পেরেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি বা অন্য কোনো সরকার ভারতের কাছে দাবি আদায়ের সাহস পায়নি। তারপরও তারা ভারতবিরোধী কথা তুলে নানা বক্তব্য দিয়ে আসছে।” বাংলাদেশে কারা ভারতের দালালি করে সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজকে ভারতবিরোধী কথা খুব শুনা যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “২০০১ সালে নির্বাচনের আগে যখন আমেরিকান কোম্পানি আমাদের গ্যাস ভারতের কাছে বিক্রি করতে চাইলো তখন ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল কে? খালেদা জিয়াই তো দিয়েছিলেন। তিনিই তো ক্ষমতায় এসেছিলেন। আমি তো চেয়েছিলাম, আমার দেশের সম্পদ আগে দেশের মানুষের কাজে লাগবে। ৫০ বছরের রিজার্ভ থাকবে, তারপর ভেবে দেখবো আমরা বিক্রি করবো কী করবো না। ফলাফল কী? ‘র’ (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এর প্রতিনিধি তো হাওয়া ভবনে বসে থাকতো। আমেরিকার অ্যাম্বাসির লোক হাওয়া ভবনে বসে থাকতো। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে হারাতে তো কাজ করেছে তারা।”
১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার ভারত সফর নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ভারতে গিয়ে ওনি বেশ ঘুরেটুরে আসলেন। যখন এখানে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলেন, গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে কী হলো, ওনি বলছেন, ‘গঙ্গার পানির কথা? আমি তো ভুলেই গেছি।” পরে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর পরই গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করা হয় বলেও জানান তিনি।
ভারতের সঙ্গে ভূমিবিরোধ এবং ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ মীসাংসা নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া- কোনো সরকার এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এগুলোর মিমাংসা হয়।
বিএনপির ভারতবিরোধিতা অহেতুক এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশে বলেও মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা ভারতের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারেনি, এখন আবার ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে। আমি একটা কথাই বলবো, এ সমস্ত খেলা তারা বহু লেখেছে। তাদের কাছে দেশপ্রেম নয়, ক্ষমতাটাই ভোগের বস্তু।”
গোনিউজ২৪/এম
আপনার মতামত লিখুন :