অনেক দেশ ওজোনস্তরের জন্য ক্ষতিকারক গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করলেও এখনও ঝুঁকি কমছেনা। এ বছর ওজোনস্তরের ছিদ্র বিজ্ঞানীদের আশঙ্কাকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ। ২ অক্টোবরের এক হিসেব অনুযায়ী ওজোনস্তরের ছিদ্রের আয়তন এখন ২৮.২ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড এটমফিয়ার এসোসিয়েশন। জানা যায়, এর আয়তন পুরো উত্তর আমেরিকার চেয়েও বেশি। গত বছরের সেপ্টেম্বরের হিসেব অনুযায়ী এর আয়তন ছিলো ২১.১ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। ১৯৯১-২০১৪ সালের পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী, এ সময়ের মধ্যে চারগুণেরও বেশি বেড়েছে ছিদ্রটি। নাসার গোডার্ড স্পেশ ফ্লাইট সেন্টারের প্রধান বিজ্ঞানী পল এ নিউম্যান বলেন, ‘এ বছর ছিদ্রের ব্যসার্ধ বৃদ্ধি পেলেও এর থেকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো সম্পর্কে আমাদের পরিস্কার ধারণা রয়েছে এবং পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের চেয়ে এগুলো বেশ ঠান্ডা এলাকা, তাই ছিদ্র দিয়ে খুব বেশি তাপ আসলেও তেমন সমস্যা নেই।’ কিন্তু তবুও খুব একটা নিরাপদ নয় বিশ্ব। অতিবেগুণী রশ্মির হার বেড়ে যাওয়াতে হুমকির মুখে সবাই। এছাড়া এন্টার্কটিকার বরফ গলতে শুরু করায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য হুমকির মুখে রয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশকিছু দেশ। উল্লেখ্য, বিজ্ঞানীদের সতর্ক বাণীর পর ক্লোরোফ্লোরো কার্বন গ্যাস ব্যবহারের হার কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় হুমকির মুখে থাকা দেশেগুলো। কারণ, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন গ্যাস ওজনস্তরে ছিদ্র তৈরী করে। কিন্তু তবুও এই ছিদ্র ক্রমাগত বড় হয়ে চলছে এবং আগামী কয়েকমাসের মধ্যে এন্টার্কটিকায় অতিবেগুণী রশ্মির হার বেড়ে যাবে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে। যাকে রীতিমত উদ্বেগের কারণ বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। ওজন স্তরের ক্ষতির কারণে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি পৃথিবীতে আশায় জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। এর ফলে ঋতু চক্রের পরিবর্তন হওয়ায় মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ওজন স্তরের ক্ষয় ও এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা তৈরিতে প্রতিবছর ১৬ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক ওজন দিবস পালন করা হয়। ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বায়ুমণ্ডলের ওজনস্তর ক্ষয়ের জন্য দায়ী দ্রব্যগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিত করার জন্য ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় ওজনস্তর ধ্বংসকারী পদার্থের ওপর মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হয়। এই দিনটিতেই পালিত হয় বিশ্ব ওজন দিবস বা আন্তর্জাতিক ওজনরক্ষা দিবস হিসেবে।
আপনার মতামত লিখুন :